বাংলাদেশের পরিবহন জগতে পেডেল স্টিমারের রয়েছে বিশাল ভুমিকা। প্রায় শত বছর ধরে এগুলো চলাচল করছে। বৃটিশ শাসনামলে এগুলো ঢাকা/বরিশাল, বরিশাল/কোলকাতার মধ্য যোগাযোগ রক্ষা করতো । মানুষ তখন এ স্টিমারে করে গোয়ালন্দ যেতো এরপর ট্রেনে কোলকাতা। বলা হয়ে থাকে এ পেডেল স্টিমারের মালিকরা বৃটেন বসে কলকাঠি নেড়েছিলো বলে বরিশাল রেলপথ যায়নি। তবে এগুলো এখন আর স্টিম এ চলেনা, চলে ডিজেলে। নাম তবু রয়ে গেছে স্টিমার। আবার কোন এক অজানা কারনে এর অন্য নাম : রকেট সার্ভিস। হয়তো আগের দিনে এটি ছিলো সবচে গতি সম্পন্ন । তাই এ নামকরন।
সারা বিশ্বে হাতে গোনা যে কটি পেডেল স্টিমার আছে তার মধ্যে ৫ টি আছে বাংলাদেশে। এগুলোর নাম হল : মাসহুদ, অস্ট্রিচ, লেপচা, শেলা ও টার্ন। এর মধ্যে ‘মাসহুদ’ ও ‘অস্ট্রিচ’৷ প্রায় শতবর্ষী পুরনো এ স্টিমার দুটি তৈরি হয়েছিল যথাক্রমে ১৯২৮ ও ১৯৩৮ সালে কলকাতার গার্ডেন রিচ ওয়ার্কশপে৷ শুরুর দিকে এসব স্টিমারে জ্বালানী হিসেবে কয়লা ব্যবহার করা হতো। আশির দশকের শুরুতে এগুলো ডিজেল ইঞ্জিনে রুপান্তরিত করা হয়। বড় বড় দুটি পেডেল দিয়ে সামনের দিকে এগোয় আর তাই নাম পেডেল স্টিমার।
ঢাকার সদরঘাট থেকে ছেড়ে স্টিমার চাদপুর হয়ে পরদিন সকালে বরিশাল পৌছে। বরিশাল যাত্রাবিরতি করে আধ ঘন্টার মতো। এরপর নলছিটি, ঝালকাঠী, কাউখালী, হুলারহাট (পিরোজপুর), চরখালী, বড় মাছুয়া, সন্নাসী হয়ে মোড়েলগঞ্জ। আগে খুলনা পর্যন্দ যেত কিন্তু নাব্যতা সংকটের কারনে এখন আর যেতে পারেনা।
বিদেশী ট্যুরিষ্টদের কাছে বেশ জনপ্রিয় এ সার্ভিসটি। প্রায় প্রতিটি ট্যুরিষ্টেই ভ্রমণ তালিকায় পেডেল স্টিমার এর নাম থাকে। অনেক বিদেশী শুধু এটাতে চড়তেই বাংলাদেশে আসেন। গত বেশ কিছু বছর এগুলো ক্রমাগত লোকসান দিয়ে আসছে। এছাড়া এগুলো মেরামতেও কোটি কোটি টাকা খরচ হয়। তাই সরকার হয়তো একসময় বন্ধ করে দেবে এসব পুরোনো স্টিমার। সেটা করার আগেই একবার ঘুরে আসুন শতবর্ষী এ জাহাজে। বিস্তারিত নীচে :
ছাড়ার সময় : প্রতি শনিবার, রবিবার, মঙ্গলবার এবং বুধবার
সময় : সন্ধ্যা ৬.৩০ মিনিট।
স্থান : ঢাকা সদরঘাট
ভাড়া :
বরিশাল : ডেক ১৭০ টাকা, ফার্ষ্ট ক্লাস এসি কেবিন ২৩০০ টাকা ( ২ বেড ), সেকেন্ড ক্লাস নন এসি ১২৬০ টাকা ( ২ বেড )
মোড়লগঞ্জ : ডেক ২৮০ টাকা, ফার্ষ্ট ক্লাস এসি কেবিন ৩৭১৫ টাকা ( ২ বেড ), সেকেন্ড ক্লাস নন এসি ২১০০ টাকা ( ২ বেড )
টিকেট : টিকেট অনলাইন এ কাটতে হয়। www.shohoz.com এ গিয়ে ডানদিকে Launch এ ক্লিক করলে একটা ঘর আসে। সেখানে ডেট বসিয়ে কার্ড বা বি ক্যাশ এ পেমেন্ট করলে টিকেট চলে আসে। টিকেট সাধারনত যাত্রার ৪-৫ দিন আগে দেয়া হয়।
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1264163476931932&id=1255069934507953
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন