বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৩

পিপড়া এবং কর্মী ব্যবস্থাপনা


প্রতিদিন ভোরে ছোট্র এক পিপড়া তার কাজে যোগদান করে এবং সাথে সাথেই কাজ শুরু করে দেয়।

সে প্রচুর উপাদন করত এবং সে খুবই সুখী ছিল।

সিংহ, যে ছিল প্রতিষ্ঠানের প্রধান, অবাক হয়ে দেখল পিপড়া কোন তত্বাবধান ছাড়াই কাজ করছে।

সিংহ ভাবল, তত্বাবধান ছাড়াই যদি পিপড়া এত পরিমাণে উপাদন করতে পারে; তত্বাবধায়ক থাকলে নিশ্চয়ই উপাদন আরো বেশী হত।

তাই তেলাপোকাকে তত্বাবধায়ক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হল; তত্বাবধায়ক হিসেবে যার ছিল ব্যাপক অভিজ্ঞতা এবং সে চমকার প্রতিবেদন লেখায় দক্ষ ছিল।

তেলাপোকা ঘড়িসহ হাজিরা পদ্ধতি চালু করল প্রথমে।

তার অফিস সহকারীও দরকার হল প্রতিবেদন তৈরীতে সহায়তার জন্য এবং……

….সে মাকড়সাকে নিয়োগ দিল যে তার তথ্য সংরক্ষন করতো এবং ফোনকলগুলো তত্বাবধান করতো।

সিংহ তেলাপোকার প্রতিবেদন দেখে পুলকিত হল
এবং তাকে গ্রাফ আকারে উপাদনের হার এবং প্রবনতা বিশ্লেষন (Trend analysis) দেখাতে নির্দেশ দিল যাতে ওগুলো বোর্ড মিটিংয়ে উপস্থাপন করা যায়।

একারনে তেলাপোকা একটি নতুন কম্পিউটার ও লেজার প্রিন্টার কিনল এবং...

...মাছিকে আইটি বিভাগের দায়িত্ব দিল।

এদিকে পিপড়া যে একদা ছিল অত্যন্ত কার্যক্ষম এবং নিশ্চিন্ত, নতুন এই দলিল দস্তাবেজ ও সভার আধিক্যের প্রতি বিতৃষ্ঞ ছিল যা তার বেশীরভাগ সময় নষ্ট করতো।

সিংহ এই সিদ্ধান্তে উপনীত হল যে, পিপড়ার বিভাগের দায়িত্ব একজনকে দেয়ার এখনই উপযুক্ত সময়।

উচ্চিংড়ে (cicada) কে এই দায়িত্ব দেয়া হল, যার প্রথম কাজ হল তার নিজের অফিসের জন্য একটি নতুন কার্পেট ও ergonomic চেয়ার কেনা।

নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি উচ্চিংড়ের আরো প্রয়োজন হল একটি কম্পিউটার এবং একজন ব্যক্তিগত সহকারী, যাকে সে তার আগের বিভাগ থেকে নিয়ে আসলো, Work and Budget Control Strategic Optimisation Plan তৈরীতে সাহায্য করা জন্য।

মর্যাদাপূর্ণ এবং প্রখ্যাত পরামর্শক পেঁচাকে নিয়োগ দেয়া হল নিরীক্ষা পরিচালনা এবং সমাধানের সুপারিশ প্রদানের জন্য।

পেঁচা উক্ত বিভাগে তিন মাস সময় ব্যয় করলো এবং কয়েক খন্ডের বিশাল প্রতিবেদন পেশ করলো যার সারসংক্ষেপ হলঃ

“এই বিভাগে অতিরিক্ত লোকবল আছে…”
কাকে প্রথম বরখাস্ত করল সিংহ?

অবশ্যই পিপড়াকে; কারণ
“তার কাজে প্রেরণার অভাব ছিল এবং তার মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব ছিল”

মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল, ২০১৩

মজাদার ও শিক্ষনীয় (ওয়ারেন বাফেট সম্পর্কিত)



ওয়ারেন বাফেট, বিশ্বের দ্বিতীয় ধনী, দাতব্য খাতে মাঃ ডঃ ৩১ বিলিয়ন দান করেছেন। CNBC তে দেয়া একঘন্টার সাক্ষাকারে তার জীবনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক ধরা পড়েঃ

১. তিনি জীবনের প্রথম শেয়ার কেনেন ১১ বছর বয়সে এবং এখন তার আফসোস তিনি অনেক দেরীতে শুরু করেছেন।
       ওই সময় জিনিসপত্রের দাম সস্তা ছিল
       আপনার সন্তাদের বিনিয়োগে উসাহিত করুন।

২. ১৪ বছর বয়সে তিনি সংবাদপত্র বিলির মাধ্যমে অর্জিত আয় থেকে জমিয়ে ছোট একটা খামার কিনেন।
       ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের মাধ্যমে অনেক কিছু করা সম্ভব
       আপনার সন্তানকে কোন ধরনের ব্যবসায় উসাহিত করুন।

৩. তিনি এখনও মধ্য ওমাহার ৩ বেডরুমের থাকেন যা তিনি কিনেছিলেন ৫০ বছর আগে তার বিয়ের পর। তিনি বলেন ওই বাড়িতে তার দরকারি সবকিছুই আছে। তার বাড়িতে কোন দেয়াল বা বেড়া নেই।
       আপনার “আসলেই দরকার” না থাকলে কোনকিছু কিনবেন না এবং
       আপনার সন্তানকে এভাবে চলতে এবং ভাবেত উসাহিত করুন।

৪. তিনি নিজেই গাড়ি চালিয়ে সব জায়গায় যান এবং তার সাথে গাড়িচালক থাকে না বা তিনি কোন দেহরক্ষী সাথে নিয়েও ঘোরেন না।
       আপনি যা আপনি তাই

৫. তিনি কোন প্রাইভেট জেট ব্যবহার করেন না, যদিও পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রাইভেট জেট কোম্পানীর মালিক তিনি।
       সবসময় চিন্তা করুন কিভাবে সাশ্রয়ী উপায়ে কোন কাজ করা যায়।

৬. তার কোম্পানী, বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে, ৬৩ টি কোম্পানীর মালিক। তিনি বছরে মাত্র একবার এসব কোম্পানীর সিইও দের তাদের বাসরিক লক্ষ্যমাত্রার ব্যাপারে চিঠি দেন। তিনি কখনও সভা আহ্বান করেন না এবং তাদেরকে নিয়মিতভাবে ডাকেন না।
       উপযুক্ত মানুষকে যথাস্থানে নিয়োগ দেন।

৭. তিনি তার সিইও দের জন্য দুটি নিয়ম বেঁধে দিয়েছেনঃ
       নিয়ম ১: শেয়ার হোল্ডারদের অর্থ হারানো চলবেনা
       নিয়ম ২: নিয়ম ১ ভুলে যাওয়া চলবে না
              লক্ষ্য স্থির করে দিন এবং লক্ষ্য রাখুন সেই অনুযায়ী লোকজন কাজ করছে কিনা।

৮. তিনি অভিজাত সমাজে সামাজিকতা করেন না। বাসায় ফিরে তিনি নিজের জন্য পপকর্ন তৈরী করে এবং টিভি দেখে সময় কাটান।
       লোক দেখানোর জন্য কোনকিছু করবেন না। নিজের মত থাকুন এবং নিজের যা ভাল লাগে তাই করুন।

৯. ওয়ারেন বাফেট মোবাইল ফোন বহন করেন না এবং তার ডেক্সে কোন কম্পিউটারও নেই।

১০. পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি বিল গেটস এর সঙ্গে মাত্র ৫ বছর আগে তার প্রথম দেখা হয়। বিল গেটস এর ধারনা ছিল তাদের দুজনের মধ্যে কোন মিল নেই। তাই তিনি তাদের বৈঠকের জন্য মাত্র আধাঘন্টা সময় রেখেছিলেন। কিন্তু যখন গেটস তার সঙ্গে বসলেন বৈঠকটি ১০ ঘন্টাব্যাপী হয়েছিল এবং বিল গেটস ওয়ারেন বাফেট এর ভক্তে পরিনত হন।

তরুনদের প্রতি তার উপদেশঃ
“ক্রেডিট কার্ড (ব্যাংক লোন) দেখে দূরে থাকো এবং নিজের জন্য বিনিয়োগ কর এবং মনে রেখঃ
       ক.  অর্থ মানুষকে তৈরী করেনি বরং মানুষই অর্থ তৈরী করেছে।
       খ.  নিজের মতো করে সহজ-সরল জীবন যাপন কর।
       গ.  অন্যেরা যা বলে তা করোনা; তাদের কথা শোন, কিন্তু নিজের কাছে যা ভাল মনে হয় তা কর।
       ঘ.  ব্রান্ডে পিছনে হন্যে হয়ে ঘুরো না যা পরতে আরাম লাগে তা পর।
       ঙ.  অপ্রয়োজনীয় জিনিসের পিছনে অর্থ ব্যয করোনা; বরং যাদের আসলেই দরকার তাদের জন্য অর্থ ব্যয় কর।
       চ.  মোট কথা জীবনটা তোমার; কেন অন্যেরা তোমার জীবনকে নিয়ন্ত্রন করবে।”
(সাক্ষাকার দেয়ার সময় ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় বিল গেটস প্রথম এবং তিনি দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন)

সংগৃহিত ও অনুদিত