রবিবার, ২০ মার্চ, ২০১৬

উর্দু ও হিন্দি

একবার এক বিজ্ঞ ব্যক্তি তাহার শিষ্যদের বলিলেন,
এই নাও কাঁচামরিচ। একটা বিড়ালের দিকে আঙ্গুল
দেখাইয়া বলিলেন, বিড়ালটিকে কাঁচা মরিচ
খাওয়াইতে হইবে।
প্রথম শিষ্য বিড়ালকে ধরিয়া তাহার
মুখে কাঁচা মরিচ ঠেসিয়া দিতে লাগিল। সে ব্যর্থ
হইলো, বিড়ালের নখের আঘাতে কিছু আহতও হইলো।
পরের শিষ্য এক বাটি দুধ আনিয়া তাহাতে মরিচ
মিশাইয়া দিল। বিড়াল আসিয়া গন্ধ
শুঁকিয়া চলিয়া গেল।
এইভাবে প্রত্যেকেই চেষ্টা করিয়া ব্যর্থ হইলো।
শেষে বিজ্ঞ ব্যক্তি বলিলেন, আমাকে দাও।
তিনি একটি মরিচ নিয়া বিড়ালের
পশ্চাৎদেশে ঘষিয়া দিলেন।
সকলে অবাক হইয়া দেখিল, বিড়াল নিজের
পশ্চাৎদেশের মরিচ স্বেচ্ছায় চাটিয়া খাইতেছে।
..........................
পাকিস্তানীরা আমাদের জোর করিয়া উর্দু
খাওয়াইতে চাহিয়াছিল। ব্যর্থ হইয়াছে।
ভারতীয়রা বুদ্ধমান, আমাদের
পশ্চাৎদেশে হিন্দি ডলিয়া দিয়াছে। কাজ হইতেছে।

সোমবার, ১৪ মার্চ, ২০১৬

দায়িত্ববোধ

ছেলেরা যতদিন বাবা না হয় ততদিন কত রকম তাফালিং করে!!

সন্তানের পিতা হওয়ার পরে এদের যে দায়িত্ববোধ আসে তা বোধহয় মা হওয়া কোনো মেয়ের মধ্যেও আসে না......

কনগ্রেটস তামিম বাবা........

উৎসঃ https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=10205297599589375&id=1529101520

বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ, ২০১৬

হ্যাকিং

ভাবটা এমন, আমরা জানতাম ই না যে, হ্যাকিং হয়। সারা পৃথিবীতে এইধরনের ঘটনা ঘটছে। মোকাবেলার চেষ্টা হয়। আমরা চোখ বুজে ছিলাম। যেন না বুঝার ভান করে কোন প্রস্তুতির চেষ্টা না থাকলে হ্যাকাররা আমাদের করুনা করে ছেড়ে দেবে। বাস্তবতা হল, প্রযুক্তি নির্ভর দেশে কোন কোন কোম্পানী এন্টি হ্যাকারদের সিইও দের থেকে বেশী বেতন দেয়।
Welcome to the real world.

ICC, criminals

"If they have a concern about my bowlers, I have a concern about their [ICC's] actions as well,"
: Hathurusingha

হ্যা, আমাদের প্রত্যেকেরই আইসিসির ‘অ্যাকশন’ নিয়ে সন্দেহ আছে। ঠিক সন্দেহ নয়, আমরা জানি, আইসিসির অ্যাকশন বৈধ সীমার অনেক ওপার পর্যন্ত বাঁকা হচ্ছে। নইলে বিশ্বকাপ এলেই নারিন, আজমল, সোহাগ, আল আমিনরা সন্দেহে পড়েন।
আরেকটা বিশ্বকাপ শুরু হতেই একটা দলের মূল দু জন স্টাইক বোলার সন্দেহে পড়েন। সেটাও এমন টাইমিং করে, যাতে সানি ও তাসকিন চেন্নাই ছাড়া কোথাও পরীক্ষা দিতে না পারেন!
হাতুরুসিংহেকে স্যালুট।
তিনি প্রথম দায়িত্বপূর্ন ব্যক্তি, যিনি মঞ্চে বসে কথাটা বলেছেন। এবার দয়া করে কেউ আমাদের বিসিবি বরাবর কিছুটা মেরুদন্ডের ওষুধ সাপ্লাই দেন। যাতে তারাও কথা বলতে শেখেন।

Source : https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=10153439876862596&id=698222595

সোমবার, ৭ মার্চ, ২০১৬

বরিশাল ভ্রমণ

হক সাহেবের দেশে :

(একটি জায়গায় যাবার আগে যদি তার ইতিহাস জেনে যান তবে ভ্রমণের আনন্দ বেড়ে যায় বহুগুন। আর সেজন্যই শহর বরিশাল নিয়ে আমার এ ক্ষুদ্র প্রয়াস)

শেরে বাংলা একে ফজলুল হক এর নাম শোনেননি এমন মানুষের দেখা পাওয়া ভার। একাধারে শিক্ষিবিদ, আইনজীবি, দানবীর, সুবক্তা হিসেবে তিনি পাক ভারত উপমহাদেশে সুপরিচিত ছিলেন। বাংলার বাঘ হিসেবে খ্যাত অবিভক্ত বাংলার প্রথম প্রধানমন্ত্রী এ,কে ফজলুল হক এর দেশ, ধান নদী খাল এর দেশ বরিশাল ঘুরে আসতে পারেন ২-১ টা দিন সময় পেলে।

বরিশাল- এখানকার অধিবাসীরা আদর করে ডাকে বইরশাল। বরিশালের রয়েছে সুপ্রাচীন ইতিহাস। এর প্রাচীন নাম চন্দ্রদ্বীপ। প্রায় ৪ হাজার বছর আগে ইন্দোচীন থেকে 'বাঙ' নামের এক জাতি এ চন্দ্রদ্বীপ এ বসতি স্থাপন করে। বাঙ শব্দের অর্থ জলাভুমি। 'বাঙ' নামের এ জাতিটি তাদের ক্ষেতে আল দিয়ে চাষ করত বলে এ এলাকাকে বাঙালাবাদ বলা হত।

এই বাঙ্গালাবাদ থেকেই বাঙালী শব্দটি এসেছে বলে মনে করা হয়। পাল এবং সেন আমলেও বঙ্গ বলতে এই দক্ষিন বঙ্গকেই বোঝাত। ড. রমেশ চন্দ্র মজুমদার লিখেছেন- দক্ষিনবঙ্গের বাঙালা থেকেই আজকের বাংলার নামকরন হয়েছে। আর বরিশাল নামটি এসেছে ব্যারিসল্ট থেকে। সপ্তদশ শতকে এখানকার বন্দরে ইউরোপীয় বণিকেরা লবন বাণিজ্য করতে আসতো। নদীতে ব্যারিকেড দিয়ে সল্ট এর শুল্ক আদায় করা হত বলে নামকরন করা হয়ে ব্যারিসল্ট কালক্রমে যা হয় বরিশাল।

কি দেখবেন : শহর বরিশালে রয়েছে অনেক কিছু দেখার। নীচে কিছু দেয়া হল।
স্টিমার ঘাট :

কীর্তনখোলা নদীর তীরেই স্টিমার ঘাট এর অবস্থান। বেশ বড় একটি জেটি প্রায় সময় খালি থাকে। তবে খুব সকাল আর সন্ধ্যায় স্টিমার ঘাটে ভিড়লে এর ব্যস্ততা বেড়ে যায়। ভেবে রোমাঞ্চিত হবেন যে প্রায় ৭০-৮০ বছর আগে ইল্যাংন্ড এর রিভার এন্ড স্টিম নেভিগেশন (আরএসএন) কোম্পানীর বিশাল বিশাল সব স্টিমার চলাচল করতো এ ঘাট দিয়ে। বাহারী নাম ছিলো সে সবের- ফ্লেমিংগো, ফ্লোরিকান, বেলুচি ইত্যাদি। বরিশাল থেকে ঢাকা, খুলনা, কোলকাতা যেতে স্টিমারই ছিলো ভরসা।

বলা হয়ে থাকে বৃটিশ সরকার নাকি বরিশালে রেলপথ সম্প্রসারনের উদ্যোগ নিয়েছিলো কিন্তু স্টিমার কোম্পানীর মালিকেরা ব্যবসা হারানোর ভয়ে লন্ডনে বসে সে উদ্যোগের দফারফা করে দেয়। বর্তমানে নুতন পুরোনো মিলিয়ে সপ্তাহে ৬ দিন স্টিমার চলাচল করে।

অশ্বিনী কুমার টাউন হল :

শহরের ঠিক কেন্দ্রস্থলে রয়েছে অশ্বিনী কুমার টাউন হল। একদা দক্ষিনাঞ্চলের সাংষ্কৃতির সুতিকাগার হিসেবে পরিচিত এ টাউন হলটিরও রয়েছে সুপ্রাচীন ইতিহাস। ১৯০৬ সালে রাজা সাহেবেের মহলে বৃটিশবিরোধী মিছিলে পুলিশ হামলা চালায়। সে সময় এ ঘটনার প্রতিবাদ করার জন্য বরিশালবাসি একটি স্থানের প্রয়োজনীয় অনুভব করে।

এরই ধারাবাহিকতায় ১৯২০ সালে মহাত্বা অশ্বিনী কুমার দত্তের সভাপতিত্বে বরিশালে একটি টাউন হল করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং একটি কমিটি গঠিত হয়। ১৯২১ সালে এর কাজ শুরু হয় এবং শেষ হয় ১৯৩০ সালে। মাঝে ১৯২৩ সালে অশ্বিনী কুমার এর মৃত্যু হলে এর নামকরন করা হয় অশ্বিনী কুমার টাউন হল। এটি নির্মানে খরচ হয় ৪০ হাজার রুপি। আর এ অর্থ সংগ্রহ হয় খেলাফত আন্তোলন, অসহযোগ আন্দোলন এর সময় গৃহীত ফান্ড থেকে।

প্রতিষ্ঠার পর থেকেই টাউন হলটিতে বরিশালের নানা সাংষ্কৃতিক এবং রাজনৈতিক অনুষ্ঠান হয়ে আসছে। বরিশাল এর আরেক সুসন্তান বিপ্লবী সতীন্দ্রনাথ সেন এই হলের একটি রুমে থাকতেন।

বি এম কলেজ : প্রায় ১২৬ বিঘা জমির ওপর দাড়িয়ে থাকা বি এম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ একটি দর্শনীয় স্থান। কলেজটির রয়েছে এক দীর্ঘ ইতাহাস। বরিশালের ম্যাজিষ্ট্রেট রমেশ চন্দ্র দত্তের অনুপ্রেরনায় মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত ১৮৮৪ সালে তর বাবার নামে ব্রজমোহন ইন্সটিটিউট স্কুল (বিএম ইন্সটিটিউট) প্রতিষ্ঠা করেন।

১৮৯৮ সালে এটি কলেজে উন্নীত হয়। তখন থেকেই এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি সুনামের সাথে দক্ষিনাঞ্চলে শিক্ষা বিস্তার করে আসছে। সে সময় প্রবেশিকা পরীক্ষায় সারা ভারতে শতকরা ২২ ভাগের বেমি পাস করেনি কিন্তু বিএম ইন্সটিটিউট থেকে শতকরা ৮২ ভাগ ছাত্র পাস করলে সারা ভারতে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। সে সময় প্রফেসর ক্যানিংহাম বি এম কলেজ পরিদর্শন করে রিপোর্ট দ্যান : "বি এম কলেজের মতো উতকৃষ্ট কলজে থাকিতে বাঙালী ছেলেরা বিদ্যা শিক্ষার জন্য কেন অক্সফোর্ড যায়, আমি বুঝিতে পারিনা।"

তবে এর কিছুদিন পরেই কলেজটি বৃঠিশ সরকারের রোষানলে পড়ে অশ্বীনি কুমারের স্বদেশী আন্দোলনে জড়িয়ে পরার কারনে। এ আন্দোলনে কলেজের বহু শিক্ষক এবয়ং ছাত্ররা অংশগ্রহন করে। তারা গান বেধেছেন, মিছিল করেছেন, জেল খেটেছেন এবং বিদেশী দ্রব্য বর্জনের ডাক দিয়েছেন। বরিশালের সাধারন মানুষও এ আন্দোলন এ যোগ দেয়। বরিশালে সব বিদেশী পণ্য আমদানী বন্ধ হয়ে যায়। জনতা লাট সাহেবের সম্বর্ধনা অনুষ্ঠান বর্জন করে। এর ফলে বৃটিশ সরকার ক্ষেপে গিয়ে কলেজের সব সরকারি সুবিধা প্রত্যাহার করে নেয়। বৃত্তি প্রদান বন্ধ করে দেয়,ছাত্ররা পাস করে যাতে সরকারি চাকরি না পায় তার ব্যবস্থা করে। সে সময় দেবপ্রসাদ ঘোষ এন্ট্রাস পরীক্ষায় সারা ভারতে প্রথম হন। প্রথা অনুযায়ী তাকে সোনার মেডেল এবং বৃত্তি দেবার কথা, কিন্তু তাও দেয়া হয়নি।

২ য় বিশ্বযুদ্ধের সময় কলেজটি আবার বির্যয়ের মুখে পরে। ১৯৪৭ এবং পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহের কারনে কলেজের দুই তৃতিয়াংশ ছাত্র দেশ ত্যাগ করে ফলে কলেজটি অনার্স কোর্স বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় এবং কোন মতে পাস কোর্স নিয়ে চলতে থাকে। ১৯৬৪-৬৫ সালে আবার অনার্স কোর্স চালু হয়। বহু গণি লৌকের পদভারে মুখরিত ছিলো এ কলেজ। কবি জীবনানন্দ দাশ এ কলেজ থেকে ১৯১৭ সালে আইএ পাস করেন।

বিবির পুকুর : বরিশাল শহরের প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে দারুন সুন্তর একটি পুকুর যা বিবির পুকার নামে পরিচিত। এটিও দেখতে ভুলবেন না। সন্ধ্যার দিকে আলো ঝলমলে পুকুরটির পাড়ে বসে আড্ডা আর খাবারের নানান সমারোহ। আসুন দেখি এ পুকুরটি কি করে হলো।

বাংলা মুদ্রন সাহিত্যের জনক বলে পরিচিত উইলিয়াম কেরি ১৮০০ শতকে কিছু দিন বরিশাল ছিলেন। সে সময় তিনি পর্তুগিজ জলদস্যুদের কাছ থেকে জিন্নাত বিবি নামে এক মহিলাকে উদ্ধার করেন। কিন্তু সে সময় সেখানকার সমাজ মেয়েটিকে আশ্রয় দিতে না চাইলে কেরি নিজেই তাকে আশ্রয় দেন এবং জিন্নাত বিবির নামে একটি তালুক কেনেন। জিন্নাত বিবি সে তালুক নিজে ভোগ না করে জনসাধারনের জন্য একটি পুকুর খনন করান যা ওই এলাকার জলকষ্ট দুর করতো। এটিই পরে বিবির পুকুর নামে পরিচিতি পায়। পুকুর পাড় এ কেরি সাহেব একটি গির্জাও তৈরী করেন য বরিশাল এলাকার প্রথম গির্জা। এটি তৈরিল কারনে এলাকাটির নামই হয়ে যায় গির্জা মহল্লা।

বেলস পার্ক : নির্মল বাতাস খেতে যেতে পারেন বেলস পার্ক। গত শতকের গোড়ার দিকে বরিশারের ডিস্টিক্ট ম্যাজিষ্ট্রেট ছিলেন নিকোলাস বিটসন বেলস। তিনি ছিলেন ভারত দরদী ইংরেজ। বরিমালের জন্য তার ভালোবাসার অন্ত ছিলোনা। বহু জনকল্যানমুখি কাজ করে গেছেন তিনি। এই নিকোলাস বেলস ১৯০৯ সালে বরিশালে তরুনদের খেলাধুলার জন্য একটি পার্ক তৈরী করেন পরবর্তীতে যার নামকরন করা হয় বেলস পার্ক।

চারন কবি মুকুন্দ দাসের বাড়ি : বৃটিশ সরকার এবং বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনে গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা পালনকারি চারন কবি মুকুন্দ দাসের শৈশসব, কৈশোর ও যৌবনকাল কেটেছে বরিশালে। গত শতাব্দীর প্রথমদিকে তিনি একটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেনঅ নাম দেন ্বান্দময়ী মন্দির। নথুল্লাবাদ বাস স্ট্যান্ড এর পাশেই এ মন্দিরে নেতাজি সুভাব বসু, দেশবন্দু চিত্তরঞ্জন দাস, মহাত্মা গান্ধীসহ অনেক বিখ্যাত মাুনষজন গিয়েছেন। আপনিও ঘুরে আসুন।

ওপরের এগুলো ছাড়াও দেখতে পারেন :

মাধবপাশা দুর্গাসাগর দীঘি : শহর থেকে প্রায় ১২ কি:মি দুরে এ ২৫০০ হেক্টর আয়তন এর এ দিঘীটি ১৭৮০ সালে খনন করান মাধবপাশা রাজ্যর রাজা জয়নারায়ন। দিঘীটির চারপাশ প্রাচীর দিয়ে ঘেরা এবং মাঝে রয়েছে একটি দ্বীপ। একটি বিকেল কাটাবার জন্য দারুন সুন্দর একটি স্থান এটি।

গুঠিয়া বায়তুল আমান মসজিদ : বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর মসজিটি অবস্থিত বরিশাল থৈকে ২৫ কি:মি: দুরের গুঠিয়ায়। দুর্গাসাগর থেকে ১০ মিনিট লাগবে যেতে।

চাখার শের এ বংলার বাড়ি : বরিশাল শহর থেকে প্রায় ৩২ কি: মি: যদিও বাড়িঘর নেই তবে তার স্মৃতির একটি যাদুঘর আছে এবং তার প্রতিষ্টিত কলেজ ও স্কুল রয়েছে বেশ কটি।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় : আধুনিক স্থাপত্যকলায় নির্মিত। শহর থেকে ৪-৫ কি:মি: দুরে।

source: বেড়াই বাংলাদেশ

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=549508918552007&id=223755871127315

শুক্রবার, ৪ মার্চ, ২০১৬

টিভি সিরিয়ালের প্রভাব

টিভি সিরিয়ালের সরাসরি আছর দেখা যাচ্ছে।
মা বাচ্চা মেরে ফেলছে।
অনেক মা এখন পরিষ্কার বুঝতে পারছেঃ
স্বামী, সন্তান, পরিবার তাদের এগুতে দিচ্ছেনা।
সমাজ তাদেরকে পেছনে টেনে রাখছে।
পুরুষদের একমাত্র কাজই হল মহিলাদের হয়রানি করা।
এধরনের ধারনা পরস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারবে কেবল।
উন্নতি নয়।
পিতারাও দিনদিন হিংস্র হয়ে উঠছে।
এটাতো সবাই জানে ও মানে।

(আমার ব্যক্তিগতজীবন সম্পর্কিত নয়। সাধারন পর্যবেক্ষণ)

বৃহস্পতিবার, ৩ মার্চ, ২০১৬

রকেট স্টিমার

বাংলাদেশের পরিবহন জগতে পেডেল স্টিমারের রয়েছে বিশাল ভুমিকা। প্রায় শত বছর ধরে এগুলো চলাচল করছে। বৃটিশ শাসনামলে এগুলো ঢাকা/বরিশাল, বরিশাল/কোলকাতার মধ্য যোগাযোগ রক্ষা করতো । মানুষ তখন এ স্টিমারে করে গোয়ালন্দ যেতো এরপর ট্রেনে কোলকাতা। বলা হয়ে থাকে এ পেডেল স্টিমারের মালিকরা বৃটেন বসে কলকাঠি নেড়েছিলো বলে বরিশাল রেলপথ যায়নি। তবে এগুলো এখন আর স্টিম এ চলেনা, চলে ডিজেলে। নাম তবু রয়ে গেছে স্টিমার। আবার কোন এক অজানা কারনে এর অন্য নাম : রকেট সার্ভিস। হয়তো আগের দিনে এটি ছিলো সবচে গতি সম্পন্ন । তাই এ নামকরন।

সারা বিশ্বে হাতে গোনা যে কটি পেডেল স্টিমার আছে তার মধ্যে ৫ টি আছে বাংলাদেশে। এগুলোর নাম হল : মাসহুদ, অস্ট্রিচ, লেপচা, শেলা ও টার্ন। এর মধ্যে ‘মাসহুদ’ ও ‘অস্ট্রিচ’৷ প্রায় শতবর্ষী পুরনো এ স্টিমার দুটি তৈরি হয়েছিল যথাক্রমে ১৯২৮ ও ১৯৩৮ সালে কলকাতার গার্ডেন রিচ ওয়ার্কশপে৷ শুরুর দিকে এসব স্টিমারে জ্বালানী হিসেবে কয়লা ব্যবহার করা হতো। আশির দশকের শুরুতে এগুলো ডিজেল ইঞ্জিনে রুপান্তরিত করা হয়। বড় বড় দুটি পেডেল দিয়ে সামনের দিকে এগোয় আর তাই নাম পেডেল স্টিমার।

ঢাকার সদরঘাট থেকে ছেড়ে স্টিমার চাদপুর হয়ে পরদিন সকালে বরিশাল পৌছে। বরিশাল যাত্রাবিরতি করে আধ ঘন্টার মতো। এরপর নলছিটি, ঝালকাঠী, কাউখালী, হুলারহাট (পিরোজপুর), চরখালী, বড় মাছুয়া, সন্নাসী হয়ে মোড়েলগঞ্জ। আগে খুলনা পর্যন্দ যেত কিন্তু নাব্যতা সংকটের কারনে এখন আর যেতে পারেনা।

বিদেশী ট্যুরিষ্টদের কাছে বেশ জনপ্রিয় এ সার্ভিসটি। প্রায় প্রতিটি ট্যুরিষ্টেই ভ্রমণ তালিকায় পেডেল স্টিমার এর নাম থাকে। অনেক বিদেশী শুধু এটাতে চড়তেই বাংলাদেশে আসেন। গত বেশ কিছু বছর এগুলো ক্রমাগত লোকসান দিয়ে আসছে। এছাড়া এগুলো মেরামতেও কোটি কোটি টাকা খরচ হয়। তাই সরকার হয়তো একসময় বন্ধ করে দেবে এসব পুরোনো স্টিমার। সেটা করার আগেই একবার ঘুরে আসুন শতবর্ষী এ জাহাজে। বিস্তারিত নীচে :

ছাড়ার সময় : প্রতি শনিবার, রবিবার, মঙ্গলবার এবং বুধবার
সময় : সন্ধ্যা ৬.৩০ মিনিট।
স্থান : ঢাকা সদরঘাট

ভাড়া :

বরিশাল : ডেক ১৭০ টাকা, ফার্ষ্ট ক্লাস এসি কেবিন ২৩০০ টাকা ( ২ বেড ), সেকেন্ড ক্লাস নন এসি ১২৬০ টাকা ( ২ বেড )

মোড়লগঞ্জ : ডেক ২৮০ টাকা, ফার্ষ্ট ক্লাস এসি কেবিন ৩৭১৫ টাকা ( ২ বেড ), সেকেন্ড ক্লাস নন এসি ২১০০ টাকা ( ২ বেড )

টিকেট : টিকেট অনলাইন এ কাটতে হয়। www.shohoz.com এ গিয়ে ডানদিকে Launch এ ক্লিক করলে একটা ঘর আসে। সেখানে ডেট বসিয়ে কার্ড বা বি ক্যাশ এ পেমেন্ট করলে টিকেট চলে আসে। টিকেট সাধারনত যাত্রার ৪-৫ দিন আগে দেয়া হয়।

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1264163476931932&id=1255069934507953

বুদ্ধিজীবী, আজব প্রাণী

হুমায়ূন আহমেদ স্যারের সাক্ষাতকার নেয়ার সময় অভিনেতা ও সাংবাদিক মাহফুজ আহমেদ একটি প্রশ্ন করেছিল....

প্রশ্নটি ছিল : ‘'এ দেশের বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা সম্পর্কে আপনার অভিমত কি?’'
.
হুমায়ূন আহমেদের সাবলীল উত্তর :-------
.
“আমাদের বুদ্ধিজীবী সমাজে যাঁরা আছেন, তাদের কার্যক্রম খুব একটা পরিষ্কার না। এরা কেন জানি ইসলাম ধর্মকে খুব ছোট করে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন।
হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান অন্য যেকোনো ধর্মের প্রায় সব উৎসবে আমাদের বুদ্ধিজীবীরা উপস্থিত থাকেন, বক্তৃতা করেন, বাণী দেন- কিন্তু ইসলামি কোনো জলসায় কেউ উপস্থিত থেকেছেন বলে শোনা যায় না। তাদের মতে, ইসলামি জলসায় কেউ উপস্থিত থাকা মানে তার বুদ্ধিবৃত্তিও নিম্নমানের। সে একজন প্রতিক্রিয়াশীল, সাম্প্রদায়িক লোক। আমাদের বুদ্ধিজীবীদের কাছে হিন্দু, বৌদ্ধ বা খ্রিষ্টানদের কোনো অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার অর্থ মুক্তবুদ্ধির চর্চা করা, প্রগতির চর্চা করা, সংস্কারমুক্ত হওয়া ইত্যাদি।
.
প্রফেসর সালাম ঢাকায় এসে যখন বক্তৃতার শুরুতে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ বললেন, তখন আমাদের বুদ্ধিজীবীরা হকচকিয়ে গেলেন। কারণ তাদের কাছে প্রগতিশীল হওয়া, বুদ্ধিজীবী হওয়া, মুক্তবুদ্ধির চর্চা করা মানেই ইসলামবিরোধী হতে হবে। তাদের কাছে রামকৃষ্ণের বাণী, যিশুর বাণী সবই গ্রহণীয়। এসব তারা উদাহরণ হিসেবেও ব্যবহার করেন; কিন্তু হজরত মোহাম্মদের বাণী কখনো তাদের মুখ থেকে শোনা যায় না। তাদের কাছে হজরত মোহাম্মদের বাণী গ্রহণযোগ্য নয়।
.
আমার মতে, পৃথিবীর তাবৎ ঔপন্যাসিক যাঁর কোটের পকেট থেকে বেরিয়ে এসেছেন, তার নাম দস্তয়ভস্কি। আরেকজন আছেন মহামতি টলস্টয়। এক রেলস্টেশনে যখন টলস্টয় মারা গেলেন, তখন তাঁর ওভারকোটের পকেটে একটি বই পাওয়া গেছে। বইটি ছিল টলস্টয়ের খুব প্রিয়। সব সময় সঙ্গে রাখতেন। সময় পেলেই পড়তেন। বইটিতে হজরত মোহাম্মদ সা:-এর বিভিন্ন সময়ে বলা ইন্টারেস্টিং কথাগুলো নিয়ে গ্রন্থিত।
.
আমি বিনয়ের সঙ্গে আমাদের বুদ্ধিজীবীদের কাছে জানতে চাইছি, আপনাদের ক’জন বইটি পড়েছেন? টলস্টয় যে বইটি পকেটে নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন, সেই বই আমাদের প্রত্যেকের একবার কি পড়া উচিত নয়? আমার মতে, প্রতিটি শিক্ষিত ছেলেমেয়ের বইটি পড়া উচিত।”

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=10207540762010708&id=1039338272

মঙ্গলবার, ১ মার্চ, ২০১৬

স্টিভ জবস ও এ্যাপল

(স্টিভ জবস যখন মারা যান তখন এ্যাপলের ব্যাংক একাউন্টে জমা ছিলো ৫০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশী। টেকনোলজির এই প্রফেট বা রাজপূত্র মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে একেবারে অন্তিম মুহুর্তে জীবন সম্পর্কে কিছু অসাধারণ কথা বলেছিলেন-যা জাপানি, চায়নীজ, হিন্দি, উর্দু, আরবী, স্প্যানিশ, পর্তুগীজ, রুশ সহ প্রায় আঠারোটি ভাষায় অনুদিত হয়েছে। শুধু তাই নয়- শিশুদের মানসিক উৎকর্ষতা বিধান এবং তাদের সুন্দর মনন গঠনের লক্ষে একাধিক ভাষায়  স্টিভ জবসের এই অমর কথাগুলো সহ উনার জীবনী বিভিন্ন দেশের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।)

বাণিজ্যিক দুনিয়ায় আমি সাফল্যের একেবারে সর্বোচ্চ চুড়োয় আরোহণ করেছি।যা আপনাদের কাছে সাফল্যের এক অনুপম দৃষ্টান্ত।কিন্তু,এ কথা ধ্রুব সত্য কাজের বাইরে আমার সামান্যই আনন্দ ছিলো। সম্পদের প্রলোভনে বিভোর ছিলাম সারা জীবন। আজ মৃত্যুশয্যায় শুয়ে যখন জীবনটাকে দেখি-তখন আমার মনে হয়, আমার সব সম্মান, খ্যাতি আর অর্জিত সম্পদ আসন্ন মৃত্যুর সামনে একেবারেই ম্লান, তুচ্ছ আর অর্থহীন।এ্যাপলের বিশাল সাম্রাজ্য আমার নিয়ন্ত্রনে ছিলো-কিন্তু মৃত্যু আজ আমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে।পৃথিবীর অন্যতম ধনী ব্যক্তি কবরের বিছানায় শুয়ে আছে সেটা আদৌ কোনো বড় ব্যাপার না। প্রতি রাতে নিজের বিছানায় শুয়ার আগে আমি কি করলাম -সেটাই আসল ব্যাপার। অন্ধকার রাতে জীবনরক্ষাকারী মেশিনের সবুজ বাতিগুলোর দিকে চেয়ে আমার বুকের গহীনে হাহাকার করে ওঠে। মেশিনের শব্দের ভিতরে আমি নিকটবর্তী মৃত্যু দেবতার নিঃশ্বাস অনুভব করতে পারি। অনুধাবন করতে পারি-শুধু সম্পদ না, সম্পদের সাথে সম্পর্কহীন জিনিসেরও মানুষের অন্বেষণ করা উচিত।

বেকুবের মতো সম্পদ আহরণই সবকিছুই নয়- আরো অনেককিছু মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।আর তা হলো- মানুষের সাথে সুসম্পর্ক তৈরী করা,চিত্রকলার সৌন্দর্য্য উপলব্ধি করা আর তারুণ্যে একটি সুন্দর স্বপ্ন নিজের হৃদয়ে লালন করা। শুধু সম্পদের পেছনে ছুটলেই মানুষ আমার মতো এক ভ্রান্ত মানুষে পরিণত হতে পারে। ঈশ্বর আমাদের সবার হৃদয়ে ভালবাসা অনুভব করার জ্ঞান দিয়েছেন।কেবলমাত্র এই নশ্বর দুনিয়ায় সম্পদের মোহে জড়িয়ে পড়ার জন্য নয়। এই যে মৃত্যু শয্যায় শুয়ে আছি।কই, সব সম্পদতো এই বিছানায় নিয়ে আসতে পারিনি। শুধু আজ সাথে আছে ভালোবাসা, প্রেম, মায়া, মমতার স্ম্বতিগুলোই । এগুলোই শুধু সাথে থেকে সাহস যোগাবে , আলোর পথ দেখাবে। ভালোবাসা পৃথিবীর সর্বত্র ছড়িয়ে আছে- সম্পদ না খুঁজে ভালোবাসাও খোঁজে নিতে হয়। সম্পদ কভু শান্তি আনেনা।মানুষের প্রতি গভীর মমত্ববোধ আর ভালোবাসাই শান্তি আনে।পৃথিবীটাকে দেখো। শুধু সম্পদের পেছনে ছুটে হাহাকার করলে জীবনটাকে উপভোগ করতে পারবে না...

পৃথিবীতে সবচেয়ে দামী বিছানা কি জানেন? তাহলো- হাসপাতালের মৃত্য শয্যা। আপনাকে নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর জন্য আপনি একজন গাড়ি চালক রাখতে পারেন। আপনার নিযুক্ত কর্মচারীরা আপনার জন্য অনেক টাকাই আয় করে দিবে।কিন্তু এটাই সবচেয়ে বড় সত্য গোটা পৃথিবী চষে, পৃথিবীর সব সম্পদ দিয়ে দিলেও একজন মানুষও পাবেন না যে আপনার রোগ বয়ে বেড়াবে।

বৈষয়িক যে কোনো জিনিস হারালে আপনি পাবেন। কিন্তু একটা জিনিসই হারালে আর পাওয়া যায়না তা হলো মানুষের জীবন। মানুষ যখন অপারেশান থিয়েটারে যায় তখন সে কেবলি অনুধাবন করে- কেন জীবনের মূল্যটা আগে বুঝিনি!! জীবনের যে স্টেজেই আপনি আজ থাকুন না কেন- ,মৃত্যু পর্দা আপনার জীবনের সামনে হাজির হবেই। সাঙ্গ হবে জীবন। তাই, এই নশ্বর জীবনের পরিসমাপ্তির আগে পরিবারের জন্য, আপনজনের জন্য, বন্ধুদের জন্য হৃদয়ে সবসময় ভালোবাসা রাখুন। নিজের জীবনটাকে ভালোবাসুন। ঠিক নিজের মতো করে অন্যকেও ভালোবাসুন।

(অনুবাদ- আরিফ মাহমুদ)

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1221357944545193&id=100000129966353

মানুষের অদ্ভুত ক্ষমতা

গল্প শোনানোর ভূত এখনো নামে নাই মাথা থেকে.....
--------------------

সুমন আমার রুমমেট ছিল!!আমরা পাশাপাশি বেডে প্রায় ছয়মাস ছিলাম!!কত কথা শেয়ার করতাম একজন আরেকজনের সাথে!!আমাদের ছোটবেলা,স্কুল,কলেজ,বাড়ির গল্প,সব!!

গল্প না করলে সময় কিভাবে কাটত বলেন??তিনমাস টানা বিছানায় শুয়ে থেকে আমার পিঠের নিচে ঘা হয়ে গিয়েছিল!!রোজ ডাক্তারকে বলতাম-আমাকে ইনজেকশন দিয়ে মেরে ফেলুন!!আমি এই কষ্ট আর নিতে পারছিনা!!

দুরারোগ্য মরণ ব্যাধিতে হসপিটালে ভর্তি ছিলাম আমি.....!!সুমনের সাথে ওখানেই পরিচয় আমার,ও ছিল আমার হসপিটালমেট!!

সুমনকে মাঝে মাঝে হিংসা হত!!ওর রোগটা আমার থেকে কম যন্ত্রণার ছিল সেই কারণে নয়!!কারণ হলো,সুমনের বেডের পাশে ইয়া বড় একটা জানালা ছিল!!সুমন মাঝে মাঝেই দুই কুনুই এর উপর ভর দিয়ে জানলার বাইরে তাকিয়ে থাকত!!

আমি জিগ্গেস করতাম- কি দেখিস এত মুগ্ধ হয়ে??

সুমন বলত-হসপিটালের পাশেই একটা বিরাট পার্ক আছে ওখানে,বিকেলে ওই পার্কে অনেক মানুষ আসে,সময় কাটায়!!ওর ভালো লাগে দেখতে!!

কখনো ও জানলার বাইরে তাকিয়ে তাকিয়ে মুচকি হাসতো!!আমি জিগ্গেস করতাম-হাসছিস কি দেখে??
- পার্কে দুজন প্রেমিক প্রেমিকা হাত ধরাধরি করে বসে আছে,দেখতে খুব ভালো লাগছে!!

কখনো কখনো অট্রহাসি দিয়ে বলত-হা হা হা,ফুটবল খেলা নিয়ে বাচ্চাদের দুইগ্রুপের মধ্যে মারামারি লেগে গেছে!!খুব মজা পাচ্ছি দেখে!!

ওই পার্কটা ঘিরে আরো কত গল্প,পাখির গল্প,আকাশের গল্প,গাছ,ফুল,আশা,জীবনের গল্প!!

আমি মুগ্ধ হয়ে শুনতাম!!আমার আবার বাঁচতে ইচ্ছা হত!!স্বপ্ন দেখতাম,ওই পার্কে আমিও একদিন হাটবো,বেঞ্চে বসে বুক ভরে বাতাস নেব!!স্বপ্ন দেখতাম আমি অবশ্যই একদিন ভালো হব!!

আর আশ্চর্য ঘটনা ঘটনা হলো,তাই হচ্ছিল!!আমি সুস্থ হচ্ছিলাম একটু একটু করে!!ডাক্তার আমার ইমপ্রুভমেন্ট দেখে ফিসফিসিয়ে বলতেন- মিরাকল,ইটস আ মিরাকল!!

একদিন ভোরবেলা সিস্টারদের উত্তেজিত কথাবার্তায় ঘুম ভাঙ্গলো!!শুনলাম সুমন চলে গেছে!!হসপিটাল ছেড়ে নয়,এই
পৃথিবী ছেড়ে!!তাকিয়ে দেখি ওর নিথর শরীরটা পরে আছে বিছানায় কিন্তু ঠোটের কোনে কোথাও যেন এক চিলতে হাসি!!

সুমনের বেডটা খালি হবার পরে আমি ডাক্তারকে বললাম-আমি ওই বেডটাতে যেতে চাই ডক্টর!!

ডাক্তার আস্বস্ত করলেন-কাল সকালে তোমার বেড টা বদলে দেব!!আজ ঘুমাও এখানেই!!

আমি এক্সাইটমেন্ট ঘুমাতে পারলাম না সারারাত!!কতদিন পর মানুষ দেখব,পাখি দেখব,গাছ দেখব,জীবনের গল্প দেখব!!কতদিন পর!

পরেরদিন আমাকে ধরে ধরে পাশের বেডে শুইয়ে দেয়া হলো!!উল্লেখ্য ততদিনে আমি কত হয়ে শুতে পারি,উঠে বসতেও পারি,ডাক্তার প্রতিবার আমার উন্নতি দেখে অবাক হন!!

সিস্টাররা চলে যাবার পরে,বুকের ভেতর ডামাডোল নিয়ে আস্তে আস্তে উঠে বসে জানালার বাইরে তাকালাম আমি!!

দেখলাম হসপিটালের ধুসর অমসৃন একটা প্রাচীর ছাড়া আর কিছুই দেখা যায়না!!কিছুই না.........

বুঝলাম,নিজে মরে যেতে যেতেও আমাকে বাঁচাতে চেয়েছিল সুমন!!আরো বুঝলাম,ও সফল হয়েছে!!কারণ পৃথিবীর কোনো না পার্কে বসে নিজের স্ত্রী সন্তানদের এই গল্প শোনানোর জন্য হলেও আমাকে বেঁচে থাকতে হবে.......................

----------------------------

বি:দ্র:-১ আমার নিজের জীবনে এমন এক বন্ধু ছিল!!তার ছিল ব্লাড ক্যান্সারের লাস্ট স্টেজ!!

আমি যখনই তার জন্য কাঁদতাম,তখনই সে হাসতে হাসতে বলত- তোমার আল্লাহর উপর বিশ্বাস নাই??তোমার কি কোনো এঙ্গেল থেকে মনে হয় এই চব্বিশ বছর বয়সে আল্লাহ আমাকে নিয়ে যাবেন??একটা মেয়ের সাথে প্রেম করা ছাড়া তো আর জীবনে কিছুই করতে পারিনাই!!এই অবস্থায় উনি কখনই নিবেন না আমাকে!!আরে পৃথিবী দেখতে হবে না??

ওর বিশ্বাস দেখে আমার এবং আমাদের যে উপকার টা হয়েছিল ত়া হলো,পৃথিবীর কোনো সমস্যাকেই আর সমস্যা মনে হতনা!!

একটাই আফসোস,সে মারা যাবার আগে তাকে বলা হয় নাই,আল্লাহ তোমাকে পৃথিবীর কিছু দেখতে দেন নাই কারণ উনি বেহেস্তে তোমার ব্যাপারে খুব ভালো কিছু প্ল্যান করে রেখেছেন!!পৃথিবী জায়গাটা বিশেষ সুবিধার না,তুমি বেহেস্তেই ভালো থাকবা...........!!

বি:দ্র:২ - পৃথিবীতে মানুষই একমাত্র প্রাণী যে তার স্বগোত্রীয় দের মধ্যে আশা জাগাতে পারে,স্বপ্ন দেখাতে,পারে বেঁচে থাকার রসদ যোগাতে পারে!!এই বিরল ক্ষমতা প্রাণী আল্লাহতায়ালা প্রাণী জগতের অন্য কারোর মধ্যে দেন নাই!!

কিন্তু,আমরা খুব কম মানুষই এই ক্ষমতার সদ্ব্যবহার করি,আমাদের যাবতীয় আনন্দ হলো অন্য মানুষকে প্যারা দেয়ার মধ্যে!!

বিরাট আফসোসের ব্যাপার ........

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=10205218974543798&id=1529101520